অনুবাদ: আবদুল্লাহ মজুমদার
সম্পাদনা: উস্তায আকরাম হোসাইন
আমাদের জীবনটা বড্ড সমস্যা সংকুল। হঠাৎ করে যদি বাবা মারা যায় অথবা মা, অথবা যদি অনাকাঙ্খিতভাবে হারাতে হয় চাকরি, জীবন যদি বিপদের ঢালি নিয়ে হাজির হয় আমাদের সামনে, আমরা ভেঙে পড়ি। দূর্বল হয়ে পড়ি। ভিতরে ভিতরে গুড়িয়ে যাই।
জীবন এমনই। বহতা নদীর স্রোতের মতো জীবনের গতিপথ সরল এবং সোজা নয়। জীবনের পথ কখনো সমান্তরাল হয়না। অনিবার্য বাস্তবতা হলো এই, জীবনের গতিপথ সবসময় দূর্গম এবং বন্ধুর। পথে পথে কাঁটা বিছানো।
আমরা যদি নবী-রাসূলদের জীবনের দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো যে তাদের জীবনের অধিকাংশ সময়ই অতিবাহিত হয়েছে এই দূর্গম এবং বন্ধুর পথ মাড়ি দেওয়ার মাধ্যমেই। তারা যে পরিবেশ, পরিস্থিতিতে তাওহীদের দাওয়াত নিয়ে ধরায় এসেছেন, সেই পরিবেশ-পরিস্থিতি কখনোই তাদের পক্ষে ছিলোনা। তাদেরকে জীবনের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে। অথচ, তাঁরা ছিলেন নিষ্পাপ। তাহলে কেনো তাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই কঠিন বাস্তবতার? হ্যাঁ, পরীক্ষা সবসময় বান্দার পাপের ফল নয়। কখনো কখনো বান্দার পরীক্ষাগুলো তার জন্যে আল্লাহর বিশেষ রহমত। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই আল্লাহ্ তাঁকে করে নেন আরো প্রিয়, আরো আপন, আরো উত্তম; কিন্তু, সব পরীক্ষাই যে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত, তাও নয়। এর কিছু আছে বান্দার পাপের ফল। বান্দার নিজ হাতে কামাই করা গুনাহর ফসল। বান্দা যখন পাপ করতে করতে নিজের আত্মাকে কলুষিত করে তোলে, তখন তার জন্যে নেমে আসে আযাব। সেই আযাবের নামই পরীক্ষা।
তবুও, এই পরীক্ষা নিয়ামত হোক বা পাপের ফসল- কোন অবস্থাতেই বান্দা ভেঙে পড়বেনা। সাহস হারাবে না। সে ধৈর্যধারণ করবে।
আল্লাহ্ বলছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো ভয়, ক্ষুধা, জান-মাল এবং ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে। অতএব, ( হে নবী ) আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান করুন’। [ বাকারা ১৫৫]
কুরআনের অনেক আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া’তাআলা ধৈর্যশীলদের জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
একজন মুসলিম কখনোই ধৈর্য হারায় না। ভেঙে পড়েনা। মনোবল হারায় না। আল্লাহর উপর, আল্লাহর ফয়সালার উপর তার পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস থাকে।
যখন বিপদ নেমে আসে আমাদের উপর, যখন জীবন হয়ে উঠে পরীক্ষাময়, চারদিক থেকে পৃথিবীটা যখন ক্রমশঃ সংকুচিত হয়ে আসে, তখন একজন মুমিন কিভাবে ধৈর্যধারণ করবে? কিভাবে সবর করবে? সে উপায়গুলোর উপর লিখেছেন যুগের ইমাম, ফকীহ, মুজাদ্দিদ ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ। তাঁর রচিত বিখ্যাত বই ‘উদ্দাতুস সাবীরিন ওয়া যাখীরাতুশ শাকিরীন’ এর সংক্ষিপ্তসার।
Reviews
There are no reviews yet.