Add to cart
Sale!

ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ

Original price was: 475.00৳.Current price is: 190.00৳.

-60%

“আমার সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা করলো। আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল- মাথা কেটে দে, ফুটবল খেলবো। আমি কি তা পারি? আমি যে বাপ। কিন্তু অত্যাচার কতক্ষণ আর সহ্য করা যায়। সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের হাতে ছেলের মাথা কেটে দিয়েছি।” ১৯৭৪ সালে আওয়ামীলীগ আমলে আওয়ামীলীগ সৃষ্ট রক্ষীবাহিনীর... আরও দেখুন

Add to Cart

ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ 475.00 Original price was: 475.00৳.190.00Current price is: 190.00৳.

“আমার সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা করলো। আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল- মাথা কেটে দে, ফুটবল খেলবো। আমি কি তা পারি? আমি যে বাপ। কিন্তু অত্যাচার কতক্ষণ আর সহ্য করা যায়। সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের হাতে ছেলের মাথা কেটে দিয়েছি।”

১৯৭৪ সালে আওয়ামীলীগ আমলে আওয়ামীলীগ সৃষ্ট রক্ষীবাহিনীর বর্বরতার নমুনা দিতে গিয়ে আহমদ মুসার “ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ” থেকে নেয়া আব্দুল আলীর সাক্ষাৎকার (পৃঃ ৬৭-৬৮)

বাজিতপুরের কিশোরগঞ্জের কোরাটিয়া গ্রামের আর একটি ঘটনা। কৃষক আব্দুল আলীর ছেলে রশীদকে কিভাবে খুন করা হয় সেটা আবদুল আলীর মুখ থেকেই শুনুন: আমার সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা করল। আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল, মাথা কেটে দে, ফুটবল খেলবো, আমি কি তা পারি! আমি যে বাপ। কিন্তু অকথ্য নির্যাতন কতক্ষণ আর সহ্য করা যায়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের হাতে ছেলের মাথা কেটে দিয়েছি। রশীদ নাকি রাজনীতি করত, আমি জানতাম না। একদিন মাতু আর শাহজাহান এসে ধরে নিয়ে গেল। আওয়ামী লীগ অফিসে সারারাত ওরা ওকে বেদম মার মারল। সকালে বলল এক হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেবে। রশীদ স্বীকার করে এল এক হাজার টাকা দেবার কথা। আমার কাছে টাকা চাইল। কিন্তু আমি দিন আনি দিন খাই, মজুর মানুষ। হঠাৎ তিন দিনের মধ্যে এক হাজার টাকা কোত্থেকে দেব? বললাম, তুই বরং পালিয়ে সিলেট চলে যা। রশীদ সিলেট চলে গেল। কিন্তু ১০-১২ দিন পর ফিরে এসে বলল, বাবা মন মানে না তোমাদের ফেলে থাকতে। সিলেট থেকে ফেরার পরই কঠিন অসুখে পড়ল। টাইফয়েড। অসুখ সারার পর একদিন তার মাকে বলল মা আজ ভাত খাব। তার মা শৈলমাছ দিয়ে তরকারী রান্না করল। এমন সময় আওয়ামী লীগের পান্ডারা রক্ষীবাহিনীসহ বাড়ি ঘেরাও করল। অসুস্থ মানুষ। কোনো রকমে বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠের দিকে দৌড় দিলো। বাবা আমার জানত না সেখানেও ঘাপটি মেরে বসে আছে আজরাইল। পাষন্ডরা দৌড়ে এসে ধরল তাকে। রশীদ সিরাজের পা ধরে বলল, সিরাজ ভাই, বিমারী মানুষ আমায় ছেড়ে দেন। ছাড়ল না। তারপর বাপ-বেটা দুজনকেই বেঁধে মার শুরু করল। কত হাতে পায়ে ধরলাম। এরপর মাতু গুলি করল রশীদকে। ঢলে পড়ল রশীদ। আমি নির্বাক তাকিয়ে রইলাম। মরার পর একজন বলল, চল ওর কল্লাটা নিয়ে যাই ফুটবল খেলব। মাতু বলল হ্যাঁ। তাই নেব। তবে ওর কল্লা আমরা কাটব না। তার বাবা কেটে দেবে। বলেই আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল কেটে দিতে। আমার মুখে রা নেই। বলে কি পাষন্ডগুলো? চুপ করে আছি দেখে বেদম পেটাতে শুরু করল। বুড়ো মানুষ কতক্ষণ আর সহ্য হয়। সিরাজ এসে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে বলল, এক্ষুনি কাট, নইলে তোকেও গুলি করব। বুঝতে পারলাম, না কাটলে ওরা আমাকেও মেরে ফেলবে। শেষে কুঠার দিয়ে কেটে দিলাম মাথা। নিয়ে সউল্লাসে চলে গেল তারা। আল্লায় কি সহ্য করব? (সূত্র: ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামী লীগ: আহমেদ মুসা)।

‘মুজিববাদীদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো সন্ত্রাসের রাজনীতি, প্রকাশ্য হত্যা, গুপ্ত হত্যা, গুন্ডামি এগুলো ছিল খুবই সাধারণ ব্যাপার। রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পগুলো ছিল হত্যাযজ্ঞের আখড়া। যশোরের কালীগঞ্জ থেকে রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্প উঠে গেলে সেখানে গণকবর আবিষ্কৃত হয়-যেখানে ৬০টি কঙ্কাল পাওয়া যায়। টঙ্গী থানার সামনে মেশিনগান স্থাপন করে শ্রমিক কলোনীর উপর নির্বিচারে গুলী চালানো হলো। শতাধিক নিহত হলেন। হাজার হাজার শ্রমিক বিশ মাইল হেঁটে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হল এবং তারা তিনদিন তিনরাত পল্টন ময়দানের উন্মুক্ত আকাশের নিচে অবস্থান করতে বাধ্য হল।’ (বাম রাজনীতি : সংকট ও সমস্যা’ -হায়দার আকবার খান রনো)

রক্ষীবাহিনী গত জানুয়ারীতে এক ময়মনসিংহ জেলাতেই অন্তত এক হাজার ৫শ’ কিশোরকে হত্যা করেছে। এদের অনেকেই সিরাজ সিকদারের পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি (ইবিসিপি)-এর সদস্য ছিল। অন্যদের মার্কসবাদী ও লেনিনবাদী দলের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। এমনকি অনেক বাঙ্গালী যুবক যারা রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় ছিল না, তারাও এই সন্ত্রাসের অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন… বস্তুত বাংলাদেশে বীভৎসতা ও নিষ্ঠুরতার অভাব নেই।”(ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামী লীগ : আহমেদ মুসা, পৃষ্ঠা-১৩৬)

লেখা—
Osman Ahmed Sakib

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ”

Your email address will not be published. Required fields are marked *