অনুবাদক : মুহিউদ্দীন মাযহারী
পৃষ্ঠা : 176, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2024
ভাষা : বাংলা
কলেজের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়া তরুণী ৪৫ দিনের মাথায় হয়ে যান একজন জাতীয় সংগ্রামের মুক্তিকামী সৈনিক। জীবনের বাঁক বদলে যায় তার। ইঁটকাঠের ঘরের বদলে খোলা আকাশটাই হয়ে যায় তার ঘর। সামান্য এক পোকামাকড় ও জোঁকের ভয়ে লাফিয়ে চিৎকার করা মেয়েটাই একদিন প্রতিজ্ঞা করে—“আমরা মাটিতে খড় বিছিয়ে ঘুমাবো। ভয়ের কিছু নেই। আমরা দেখে নেবো—কয়টা জোঁক কামড়াতে পারে আমাদেরকে।
”এভাবেই সেভেন সিস্টার্সের অন্যতম রাজ্য আসামের মুক্তিকামী সংগঠন ‘উলফা’র হাত ধরে শুরু হয় এক অস্তিত্বের লড়াই। ভারতীয় দখলদারের বিরুদ্ধে ইস্পাত-দৃঢ় সংগ্রামের জীবন। আসাম, বড়োল্যান্ড, নাগাল্যান্ড ভুটান ও মিয়ানমারের গহিন অরণ্যের এক নাতিদীর্ঘ ইতিহাস। ফলাফল স্বরূপ মমতাময়ী মায়ের ছায়া এবং ঘরত্যাগের কল্পনাও না করা তরুণ তরুণীরাই একদিন সগর্ভে গেয়ে ওঠে—
“উঠোনের মুখে দাঁড়িয়ে থেকো না মা,
পথে না দেখলে চলে যেয়ো ফের ঘরে
এখন আমার ফেরার সময় নাই।”
এমন শ্বাসরুদ্ধকর বয়ান ও টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে ‘উলফা’র সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট মণি হাজরিকার সংগ্রামমুখর আত্মকথা। উঠে এসেছে গৃহত্যাগী তরুণ তরুণীর অরণ্যের দিন ও অজ্ঞাতবাসের জীবন। উলফার সামরিক বাহিনীতে নারীবাহিনীর সূত্রপাতের ইতিকথা। ‘উলফা’র জাদুকরী উত্থান ও দাঁতে দাঁত চেপে টিকে থাকার বয়ান। বইয়ের শুরুতেই অনুবাদক কর্তৃক যোগ করা হয়েছে—আসামের নামকরণ থেকে নিয়ে আসাম ইতিহাসের আদি থেকে অন্ত। ব্রিটিশ ও ভারতীয় দখলদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সূচনার কথা।
মণি হাজরিকা!
খাদ্যসংকট আর মহামারীর কবলে পড়েও যুদ্ধ ও প্রশিক্ষণ চালিয়ে গেলেন। ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হলেন তিনি। মরণাপন্ন অবস্থা। যায়যায় হাল। শেষমেশ আশাহত হয়ে সঙ্গীরা তার ঠান্ডায় জমে যাওয়ার মতো শরীরটাকে বের করে আনলেন খোলা উঠোনের মাঝে। করুণস্বরে কেউ কেউ তো বলেই ফেলললেন—“না,মণিকে বুঝি অকালেই হারাতে হলো আমাদের।” জীবন-মৃত্যুর এই সন্ধিক্ষণ থেকেও বেঁচে যান তিনি। লিখে যান—আসামের ইতিহাসের এক জটিল সন্ধিক্ষণের প্রত্যক্ষদর্শীর দলিল।
মণি হাজরিকার শ্বাসরুদ্ধকর বয়ানে ভরপুর ‘উলফা’য় আপনাকে স্বাগতম।
Reviews
There are no reviews yet.