সাম্রাজ্যের ত্রাস

340.00

বইটি ১০তারিখ থেকে পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। মাত্র ২০কপির অর্ডার নেওয়া হবে।

মাইকেল শইয়ারের (Michael Scheuer) জন্ম ১৯৫২ সালে নিউ ইয়র্কে। তার পরিচয় একাধারে ব্লগার, লেখক, আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির সমালোচক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শান্তি ও সুরক্ষা’ কেন্দ্রের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তার কর্মজীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিচয়টি হলো তিনি আমেরিকার কেন্দ্রীয় গো য়ে ন্দা সংস্থা C I A-এর একজন... আরও দেখুন

Add to Cart

সাম্রাজ্যের ত্রাস 340.00

মাইকেল শইয়ারের (Michael Scheuer) জন্ম ১৯৫২ সালে নিউ ইয়র্কে। তার পরিচয় একাধারে ব্লগার, লেখক, আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির সমালোচক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শান্তি ও সুরক্ষা’ কেন্দ্রের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তার কর্মজীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিচয়টি হলো তিনি আমেরিকার কেন্দ্রীয় গো য়ে ন্দা সংস্থা C I A-এর একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা। ত্রিশ বছর বয়সে যোগদানের পর থেকে ২০০৪ সালে পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত প্রায় ২২ বছর C I A-তে কাজ করেছেন। আর এই ক্যারিয়ারেও সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো, তিনি ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত C I A-এর কাউন্টার টেরোরিজম সেন্টারে ‘বি ন লা দে ন ইস্যু ইউনিট’-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একই ইউনিটের বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ‘বি ন লা দে ন ইস্যু ইউনিট’ কিংবা অন্য নামে A l e c Station ছিল উ সা মা বি ন লা দে ন কে ট্র্যাক ডাউন করার জন্য আমেরিকার গোয়েন্দাদের বিশেষায়িত দল।
.
‘বি ন লা দে ন ই স্যু ই উ নি ট’-এ কাজ করার পুরো সময় জুড়ে উ সা মা বি ন লা দে ন, আ ল-কা য়ে দা এবং এর মিত্রদের ব্যাপারে অধ্যয়ন করে মাইকেল শইয়ার বেশকিছু উপলব্ধিতে পৌঁছান। এভাবে চলতে চলতে এক সময় নিজের সেই উপলব্ধিগুলো তিনি আমেরিকানদের কাছে পৌঁছে দেওয়ারও তাগিদ অনুভব করেন। সেই তাগিদ থেকে বইও লিখতে শুরু করেন। কিন্তু একইসাথে তৎকালীন পরিস্থিতিতে নিজের উপলব্ধিগুলো ভয়ঙ্করভাবে স্রোতের বিপরীত অনুভব করে শইয়ার প্রথম প্রথম নিজের বই নাম গোপন করে প্রকাশ করেন। এভাবে ২০০২ সালে তাঁর T h r o u g h O u r E n e m i e s’ E y e s এবং ২০০৪ সালে I m p e r i a l H u b r i s : Why the West Is Losing the W a r on T e r r o r প্রকাশিত হয়।
.
বইগুলোতে তিনি মূলত আমেরিকার ইসলামপন্থী শত্রুদের ব্যাপারে নিজ মাতৃভূমির নীতি নির্ধারকদের ভুল ধারণার সমালোচনা করেন। এছাড়া আমেরিকার আফগানিস্তান ও ইরাক আগ্রাসনের সমালোচনা করে শইয়ার ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, আমেরিকা আ ল – কা য়ে দার ফাঁদে পা দিয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে আমেরিকার অর্থনীতি অচিরেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। ২০০৪ সালে C I A থেকে পদত্যাগ করার পরপরই তিনি বইগুলোর লেখক হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। এভাবেই মাইকেল শইয়ার আমেরিকার যুদ্ধ ও রাজনীতি, ইসলামপন্থীদের আদর্শ ও কর্মপন্থার একজন মৌলিক ও প্রামাণ্য চিন্তাবিদ হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন।
.
পরবর্তীতে মাইকেল শইয়ারের আরও দুটো একক বই Marching Toward Hell: America and Islam After I r a q (২০০৮) এবং O s a m a B i n L a d e n (২০১১) প্রকাশিত হয়। এই বইগুলোতে শইয়ার তার উপলব্ধি ও বর্ণনাকে প্রাণবন্ত করার পাশাপাশি আরও দালিলিক প্রমাণ দিয়ে বলিষ্ঠ করে তোলেন। এখনও পর্যন্ত মাইকেল শইয়ারের একক মৌলিক বই চারটি হলেও পরবর্তীতে আরও বেশ কয়েকটি বইয়ের সহলেখক হিসেবেও কাজ করেছেন। শইয়ারের সর্বশেষ একক বই O s a m a B i n L a d e n বাংলা ভাষায় ‘সাম্রাজ্যের ত্রাস’ (২০২১) নামে প্রকাশিত হয়।
.
আন্তর্জাতিক জি হা দি সংগঠন আ ল-কা য়ে দা র আদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি ও ইতিহাসের একেবারে মৌলিক উৎসগুলো নিয়ে মাইকেল শইয়ার যেভাবে অধ্যয়ন ও গবেষণা করেছেন, তা এক কথায় বিরল। তার কাজ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে দেশ-বিদেশের শিক্ষিত চিন্তাশীল মহলের মানুষদের বাহবার পাশাপাশি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী এক মূল্যায়নও তিনি পেয়েছেন। আর সেটা হলো, স্বয়ং আ ল-কা য়ে দা নেতা উ সা মা বি ন লা দে নে র মূল্যায়ন। ২০০৭ সালের একটি বক্তব্যে উ সা মা বি ন লা দে ন আমেরিকানদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “তোমরা যদি জানতে চাও যে আসলে কী ঘটছে, কেন তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে হেরে যাচ্ছো, তাহলে উচিত হবে মাইকেল শইয়ারের বই পড়ে দেখা।” কিন্তু নিজেদের লোকের রেফারেন্স পেয়েও আমেরিকার নীতি নির্ধারকরা স্বভাবসুলভ ঔদ্ধত্য বজায় রেখেছিল, আরও ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ঢেলে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিল। হয়তো রেফারেন্স শত্রুর মুখে পেয়েছিল বলেই আমেরিকা তখন এমন আচরণ করেছিল।
.
মাইকেল শইয়ারের সত্যান্বেষণ এবং লিখালিখির ময়দানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা যায় লরেন্স রাইটকে (Lawrence Wright)। লরেন্স রাইট ২০০৬ সালে তার লিখা The Looming Tower: A l –Q a e d a and the Road to 9 / 1 1 বইয়ের জন্য খ্যাতি পান। এমনকি ২০০৭ সালে বইটির পুলিৎজার পুরস্কারও জেতেন। কিন্তু লরেন্স রাইট তার বইতে আ ল-কা য়ে দা বিশেষ করে উ সা মা বি ন লা দে নের উত্থানের যে ন্যারেটিভ বর্ণনা করেছেন, সেটিকে পরবর্তীতে মাইকেল শইয়ার তার ২০১১ সালের O s a m a B i n L a d e n বইতে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে একেবারে বানচাল করে দেন। সেই সাথে শইয়ার দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে লরেন্স রাইটের মতো লেখকরা সময়ের জনপ্রিয় স্রোতে গা ভাসিয়ে তথ্য খুঁজতে নামে বলেই এমন কাজগুলোকে রীতিমতো পূজা করা হয়, এমনকি আমেরিকার মতো পরাশক্তি নিজেকে ধোঁকার মধ্যে ডুবিয়ে রাখার সুযোগ পায়। এভাবে লরেন্স রাইটের জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি কাজকেই মাইকেল শইয়ার প্রশ্নবিদ্ধ করে দেন।
.
স্রোতের বিপরীতে সাঁতরে শইয়ার শত্রুকে সত্যিকার রূপে সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছেন ঠিক। তবে এখানে ভুল বোঝারও কোনো অবকাশ নেই। তার সমস্ত অধ্যয়ন, সমস্ত প্রচেষ্টা ছিল নিজ মাতৃভূমিকে শত্রুর ফাঁদে পা দেওয়া থেকে বাঁচানো। অবশ্য আমেরিকার নীতি নির্ধারকরা সেই পথে হাঁটেনি। দিনশেষে নিজের উপলব্ধিগুলো যে আমেরিকাকে বোঝাতেই মাইকেল শইয়ার এত পরিশ্রম করেছিলেন, এত বাক্য ব্যয় করেছিলেন, সে আমেরিকাই তাকে সত্যিকার মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আর ফলস্বরূপ এই প্রাক্তন C I A কর্মকর্তার এক কালের অপ্রিয় কথাবার্তাগুলোই পরবর্তীতে পশ্চিমা সাম্রাজ্য সময়ে সময়ে সত্য হতে দেখেছে।
.
আমেরিকার যু দ্ধ ও রাজনীতির ব্যাপারে মৌলিক চিন্তাধারা, লিখালিখি এবং অধ্যাপনার বাইরে বিভিন্ন ঘটনায় বিভিন্ন আলাপে মাইকেল শইয়ারের নাম উঠে এলেও বর্তমানে (২০২১) প্রায় ৭০-এর কোঠায় পা দেওয়া এই প্রবীণ বোদ্ধা আমেরিকায় তার পরিবারের সাথে ছিমছাম জীবন যাপনেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “সাম্রাজ্যের ত্রাস”

Your email address will not be published. Required fields are marked *